দুর্গা পুজোতে প্রতিমার উচ্চতা কত হবে তা নিয়েই ধন্দ্বে মৃৎশিল্পী থেকে আয়োজকরা

4th September 2020 2:06 pm হুগলী
দুর্গা পুজোতে প্রতিমার উচ্চতা কত হবে তা নিয়েই ধন্দ্বে মৃৎশিল্পী থেকে আয়োজকরা


নিজস্ব সংবাদদাতা ( হুগলী ) :  বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা উৎসব বাকি মাত্র হাতে গোনা  দিন। কিন্তু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে কীভাবে হবে পুজো, আদৌও পুজো হবে কিনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন মৃৎশিল্পীরা সহ বারোয়ারি পুজো কমিটি গুলি।নেই প্রতিমা তৈরির বায়না।কিছু পুজো কমিটি বেশি উচ্চতায় প্রতিমা তৈরির বায়না দেওয়ার পর তা বাতিল করে দিয়েছে বলেও বলেন তারা। রাজ্য সরকারের কোনও নির্দেশনামা না দেওয়ার কারণে।তাদের দাবি অবিলম্বে রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করুক।  দুর্গাপুজো করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্টভাবে সরকারি নিয়মাবলী। কারণ গুজরাত সরকার গণেশ প্রতিমা তৈরির ক্ষেত্রে  নির্দেশ জারি করে ছিলেন বলে দাবি করছেন মৃৎশিল্পীরা। বাড়তি উচ্চতার প্রতিমা তৈরি হলে বেশি সংখ্যক লোকজনের ভীড় সমাগম এড়ানোর জন্য এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই রাজ্যে কীভাবে দুর্গাপুজো হবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।পুজো করা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি পাওয়া যাবে কিনা,তা নিয়েও উদ্বিগ্নে রয়েছে পুজো উদ্যোক্তরা।ফলে শূন্যতা গ্রাস করেছে প্রতিমা শিল্পীদের চোখে মুখে।গত কয়েক মাস ধরে কাজ বন্ধের কারনে অনেক মৃৎশিল্পী ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে জীবিকা নির্বাহের জন্য।জেলার শ্রীরামপুরের চাতরা,সিঙ্গুর,হরিপাল,ধনিয়াখলি, তারকেশ্বর সহ বিভিন্ন জায়গার মৃৎশিল্পীরা একজোট হয়ে আন্দোলনে সামিল হওয়ার কথা ভাবছে। আশায় রয়েছে সরকারি ক্ষতিপূরণের সাহায্যের।এই পেশায় যুক্ত অনেক মৃৎশিল্পীদের কেউ করছে ১০০ দিনের শ্রমিকের কাজ,কেউবা করছে সবজি বিক্রি,কেউবা করছে ইমারতি দোকানে মুটেগিরির কাজ।সিঙ্গুরের খাসেরচক গ্রামের মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ চন্দ্র ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কথা বলার শক্তি হাড়িয়েছে।  এই পরিস্থিতিতে ১০০ দিনের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি ।বন্ধ রয়েছে তার প্রতিমা তৈরির কারখানা।জীবনে কল্পনা করতে পারেনি শিল্পী সত্তা হাড়িয়ে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে।তবুও আশায় রয়েছেন কবে সুস্থ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে শিল্পীসত্তা জীবন। "হিমাংশু জানা " মৃৎশিল্পী বলেন সরস্বতী পুজোর পর থেকে আমাদের কাজ নেই।প্রতিমা তৈরি করে আমাদের সংসার চলে।  আমাদের মত শিল্পীরা কেউ বালি, সিমেন্ট বইছে,  কেউ আবার  দোকানে কাজ করছে। ১০০ দিনের কাজ কিছু শিল্পীকে করতে দেখা যাচ্ছে।  কি করবো পেটতো কথা শুনবে না।  আমাদের যা  অবস্থা কোন কোন বাড়িতে ঠিক মত রান্না হচ্ছে না। মৃৎশিল্পীদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। কমিটির পক্ষ থেকে  বিডিও, এমএলএ, এমপি থেকে সবাইকে আমাদের সমস্যার কথা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। কিন্তু আমাদের দিকে কেউ সাহায্যের  করেনি।  আমাদের দাবি সরকার থেকে মৃৎশিল্পীদের সরকারি ঋণ দেবার ব্যবস্থা  ব্যবস্থা করা হোক।  কার কাছে যাবো বুঝতে পারছি না।  যার কাছে যাচ্ছি সবাই হাত তুলে নিচ্ছে বলছে কিছু করার নেই বলছে। প্রতিমার অর্ডার নেই। সবাই সাহায্য পাচ্ছে কিন্তু মৃৎশিল্পীদের সরকার দেখছেন না। কোন সরকারি নির্দেশিকা নেই। "শঙ্কর জানা "মৃৎশিল্পী জানান তিনটে প্রতিমার অর্ডার পেয়েছিলাম কিন্তু কমিটির লোকজন সঠিক ভাবে বলতে পারছেনা প্রতিমা নিয়ে যাবে কিনা। রাজ্য সরকার যদি নির্দিষ্ট মতামত দেন পুজো কমিটি গুলিকে। তাহলে আমরা মনে শক্তি পাবো। এখন পর্যন্ত কোন কাজকর্ম কিছুই নেই। আমি গুজরাটে গণেশ প্রতিমা কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম।  সেখানকার সরকার নির্দেশিকা দিয়ে বলে দিয়েছিলেন দেড় ফুট থেকে দু ফুটের বেশি প্রতিমা বড় হবে না। প্রতিমা বাড়িতে পুজো করতে হবে।  প্যান্ডেলে পুজো করা যাবে না। জমায়েত করা যাবে না।  আমাদের এখানকার রাজ্য সরকার যদি কিছু  নির্দেশিকা দেন তাহলে আমাদের উপকার  হবে।  রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি একজন শিল্পী।  তিনি শিল্পীদের মর্যাদা জানেন।  আমরা হাহাকারের মধ্যে রয়েছি। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন শিল্পীদের কিছু একটা ব্যবস্থা করুন।  যাতে তারা বাঁচে, যাতে তারা শিল্পটাকে বাঁচাতে পারে। আমাদের ভয় করছে। কারণ প্রতিমা তৈরি করব শেষে কমিটি গুলো না নিয়ে গেলে।  তখন আমাদের সব শেষ হয়ে যাবে। আর ঘুরে দাঁড়াবার কোন রাস্তা থাকবে না। অন্য এক মৃৎশিল্পী "বাপন মাইতি" জানান চারটি বড় প্রতিমার অর্ডার  পেয়েছিলাম। তৈরিও করেছিলাম। পরে তারা নেবে না বলে দিয়েছেন।  নতুন করে কোন অর্ডার নেই। যে সমস্ত পুজো কমিটি  দশ ফুটের প্রতিমা তৈরি করত। তারা এখন এসে বলছে পাঁচ ফুটের প্রতিমা করার কথা।  আমরা চাইছি রাজ্য সরকার নির্দেশিকা দিক।  যা সময় আছে ছোট প্রতিমা তৈরি করা যেতে পারে।  কিন্তু বড় প্রতিমা তৈরি করা সম্ভব নয়।আমাদের অনুরোধ রাজ্য সরকার মৃৎশিল্পীদের বিষয়টা যদি দেখেন তাহলে মৃৎশিল্পীরা দুবেলা-দুমুঠো খেতে পারবে।





Others News

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে

নিম্মচাপের জেরে অতিবৃষ্টি : হুগলী জেলায় ব‍্যাপক ক্ষতি চাষে


সুজিত গৌড় ( হুগলী ) :  নিম্ন চাপের জেরে শনিবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে মাথায় হাত চাষীদের।
জেলায় আলু চাষে ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে কয়েক লক্ষ টাকার উপর বলে দাবি চাষীদের। ধান জমিতে যেমন ক্ষতির পাশাপাশি হুগলী জেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষতি এবার আলু চাষে। চলতি বছরে বার বার নিম্নচাপ  চাপের জেরে যেভাবে ধান চাষ পিছিয়ে ছিল ঠিক আলু চাষও পিছিয়ে ছিল প্রায় পনোর দিন। তবে গত শুক্রবার পযন্ত হুগলী জেলায় প্রায় ৩০ শতাংশ জমিতে বসানো হয়ে গিয়েছিল আলু এবং ৬০ শতাংশ জমি আলু চাষ উপযোগী করে তুলে ছিলেন চাষীরা। ধান চাষের মত আলু চাষের শুরুতে এবার কাল হয়ে উঠলো অকাল বৃষ্টি। অকাল বৃষ্টির ফলে যে সব জমিতে ইতি মধ্যেই আলু বসানো হয়ে গিয়েছিল, সেই সব জমিতে জল জমে থৈ থৈ করছে। ফলে জমিতে বসানো সমস্ত আলু বীজ পচে নষ্ট হতে বসেছে।  কারণ আলু বসানোর পর অন্তত পনেরো থেকে কুড়ি দিন কোনো জলের প্রয়োজন পরে না আলু চাষের ক্ষত্রে।
এ বছর এক বিঘা জমিতে চাষ উপযোগী করে আলু বসানো পযন্ত চাষীদের খরচ পড়েছে প্রায় পনেরো হাজার টাকা অন্যদিকে আলু বসানোর আগে পর্যন্ত  এক বিঘা জমিকে  চাষ উপযোগী করে তুলতে খরচ পড়েছে প্রায় সাত হাজার টাকা। অর্থাৎ ইতি মধ্যে নিম্ন চাপের জেরে অকাল বর্ষণে হুগলী জেলার ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়েছে লক্ষ  লক্ষ টাকার উপর। জেলায় আলু চাষের জমির পরিমান ৯০ হাজার হেক্টর জমি। সেমবার সকাল থেকেই  আলু জমি থেকে জল বের করে আলু বীজ বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা করছেন চাষীরা। চাষীদের দাবি অকাল বর্ষণে একেবারে সর্বস্বান্ত  হয়ে পড়েছে। আবার নতুন করে আলু বসানো বা জমি তৈরি করে আবার আলু বসানো অনেকের পক্ষেই আর সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে আবহাওয়া উপযোগী হলে পুনরায় জমি আলু চাষের উপযোগী করে আলু বসাতে সময় লাগতে পারে পনেরো থেকে কুড়ি দিন। ফলে আলু চাষে ফলন যেমন কমবে খাবার আলুর জোগানেও পড়বে টান। আগামী দিনে ধানের ক্ষতির ফলে যেমন  চালের যোগান টান পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।  ঠিক তেমনি আগামী দিনে খাবার আলুর জোগানেও টান পড়বে বলে মত চাষীদের।